পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন ক্রয়ে সুদবিহীন ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। দেশের ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪১ হাজার ৫০১ জন অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীকে সফটলোনের আওতায় স্মার্টফোন ক্রয়ের জন্য জনপ্রতি সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকা প্রদান করা হবে।
এই অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের বার্ষিক বরাদ্দের বিপরীতে অগ্রিম হিসেবে সংশ্লিষ্ট খাতে সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ দেওয়া হবে। আজ বুধবার (৪ নভেম্বর) ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহের সভাপতিত্বে অনলাইন প্লাটফর্মে আয়োজিত এক সভায় শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন ক্রয়ে সুদবিহীন ঋণ দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীরা বর্তমান সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে। এটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের উদ্যোগে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অনলাইন শিক্ষায় আরও বেশি মনোযোগী হবে। তারা শিক্ষা জীবনের ক্ষতিও পুষিয়ে নিতে পারবে।
সভায় সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কর্তৃক গঠিত ‘সফটলোন অনুমোদন কমিটির’ সুপারিশের আলোকে অনধিক ৮ হাজার টাকা শিক্ষার্থীকে ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৩১ জানুয়ারির ২০২১-এর মধ্যে বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলা হয়। শিক্ষার্থীকে শুধুমাত্র আসল অর্থ পরিশোধ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর কিংবা অধ্যয়নকালীন ৪টি সমান কিস্তিতে বা এককালীন তারা এই ঋণ পরিশোধ করতে পারবে।
করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতির কারণে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম নিশ্চিত করতে ৯ আগস্ট দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্মার্টফোন কিনতে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীর তালিকা চেয়ে উপাচার্যদের নিকট পত্র দেয় ইউজিসি। এরই প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ যাচাই-বাছাই করে সর্বমোট ৪১ হাজার ৫০১ জন অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীর তালিকা কমিশনে প্রেরণ করে।
তালিকায় আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ সংখ্যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ হাজার ৫৫৬ জন (১৯.৮৯ শতাংশ) এবং সর্বনিম্ন সংখ্যা খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ হাজার ৮৬০ জন (৩.৩৬ শতাংশ)।
উল্লেখ্য, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই ঋণ সুবিধার বাইরে রয়েছে।
সভায় ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম, প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর, প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের, সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামান, জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগের পরিচালক ড. শামসুল আরেফিন এবং অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. শাহ আলম যুক্ত ছিলেন। সভায় কার্যপত্র উপস্থাপন করেন কমিশনের অর্থ ও হিসাব বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের।