দেশে চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে চলতি বছর জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মূল্যায়নের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করার কথা বলা হয়েছে। এতে কোনো শিক্ষার্থীকে ফেল করানো যাবে না বলে জানা গেছে। এছাড়া শিক্ষা বোর্ডগুলো থেকে গ্রেড পয়েন্ট ছাড়াই শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট বিতরণ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, পরীক্ষা না হলেও শিক্ষার্থীদের পাসের সার্টিফিকেট দেয়া হবে। পরীক্ষার্থীদের রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর রয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে জিপিএ বা গ্রেড পয়েন্ট ছাড়া সকলকে পাসের সার্টিফিকেট দেয়া হবে। এসব সাটিফিকেট শিক্ষা বোর্ড থেকে স্ব স্ব স্কুলে পাঠানো হবে। সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম আমিরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জেএসসি পরীক্ষার্থী একটি প্রতিষ্ঠানে তিন বছর পড়ালেখা করেছে। তাদের সর্ম্পকে শিক্ষকদের ধারণা রয়েছে। সেটি বিবেচনা করে মূল্যায়ন করতে হবে। এখানে কাউকে ফেল করানোর কোনো সুযোগ নেই, সকলকে নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হবে।’
জানা গেছে, নিজস্ব পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করতে বিদ্যালয়গুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যেই শিক্ষা বোর্ড থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক এবং সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের চিঠি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। চিঠিতে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা না নিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণের কথা বলা হয়। সেই চিঠির পর ঢাকা বোর্ড গত ২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে নবম শ্রেণিতে উন্নীত করার নির্দেশ দেয়। তবে কী উপায়ে মূল্যায়ন করে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করা হবে সে বিষয়ে স্কুলগুলোকে এখনো কিছুই জানানো হয়নি।
এ প্রসঙ্গে এস এম আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘চলতি বছর জেএসসি পরীক্ষা বাতিল হওয়ায় অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মাধ্যমে মূল্যায়ন করে পরবর্তী ক্লাসে ভর্তির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ভর্তি থেকে কাউকে বাদ না দিয়ে সকলকে এ সুযোগ দিতে বলা হয়েছে।’
বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।