করোনা মহামারির কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন কিনতে সুদবিহীন ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
দেশের ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪১ হাজার ৫০১ জন অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীকে সফটলোনের আওতায় স্মার্টফোন কেনার জন্য জনপ্রতি সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকা দেওয়া হবে। এই অর্থ দেওয়া হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ অর্থ বছরের বার্ষিক বরাদ্দের বিপরীতে অগ্রিম হিসেবে।
ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনলাইন প্লাটফর্মে আয়োজিত বুধবার এক সভায় শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন কেনায় সুদবিহীন ঋণ দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়।
ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর কাজী শহীদুল্লাহ সভায় বলেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীরা বর্তমান সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে। এটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের উদ্যোগে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অনলাইন শিক্ষায় আরও বেশি মনোযোগী হবে। তারা শিক্ষা জীবনের ক্ষতিও পুষিয়ে নিতে পারবে।
সভায় সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গঠিত ‘সফটলোন অনুমোদন কমিটির’ সুপারিশের আলোকে অনধিক ৮ হাজার টাকা শিক্ষার্থীকে ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৩১ জানুয়ারি ২০২১-এর মধ্যে বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলা হয়। পরে শিক্ষার্থীকে শুধু আসল অর্থ পরিশোধ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর কিংবা অধ্যয়নকালীন ৪টি সমান কিস্তিতে বা এককালীন তারা এই ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন।
করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতির কারণে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম নিশ্চিত করতে ৯ আগস্ট দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্মার্টফোন কিনতে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীর তালিকা চেয়ে উপাচার্যদের চিঠি দেয় ইউজিসি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যাচাই-বাছাই করে ৪১,৫০১ জন অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীর তালিকা কমিশনে পাঠায়।
তালিকায় অস্বচ্ছল শিক্ষার্থী সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, ৮ হাজার ৫৫৬ জন (১৯.৮৯ শতাংশ) এবং সবচেয়ে কম খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ হাজার ৮৬০ জন (৩.৩৬ শতাংশ)।
উল্লেখ্য, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই ঋণ সুবিধার বাইরে রয়েছে।