করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন সরকারি চাকরির বিজ্ঞপ্তি বন্ধ থাকায় ক্ষতির শিকার হচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। তবে তাদের সেই ক্ষতি পুষিয়ে দিতে পাঁচ মাসের ছাড় দিচ্ছে সরকার। তবে এই ছাড় সবাই সব চাকরিতে পাচ্ছেন না। করোনাকালে আটকে থাকা বিজ্ঞপ্তিগুলোর ক্ষেত্রেই শুধু এই ছাড় দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় শর্ত সংবলিত প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনা এলে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। যেসব প্রতিষ্ঠান ছাড়পত্র নেয়নি, তাদের জন্য বয়সের এই ছাড় প্রযোজ্য হবে না বলে জানানো হয়েছে।
এর কারণ হিসেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, এটা খুবই জটিল বিষয়। এক জায়গা থেকে সীমারেখা টানতেই হবে। তাই যারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের উদ্যোগ নেয়নি, তাদের সুযোগ দেওয়া যৌক্তিক নয়। করোনার কারণে অনেক কিছুই থেমে গেছে। কোনো কিছুই ফেরানো সম্ভব নয়।
এজন্য যেসব প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য ছাড়পত্র নিয়েছিল, শুধু তাদের জন্যই সুযোগ রাখাটা যুক্তিযুক্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্মুক্তভাবে সবার জন্য সুযোগ রাখলে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে।
সূত্র জানায়, যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য ২৫ মার্চের আগে ছাড়পত্র নিয়েছিল, কিন্তু করোনার কারণে প্রকাশ করনি, শুধু সেগুলোতে চাকরিপ্রার্থীরা বয়সের এই সুযোগ পাচ্ছেন। শর্ত পূরণ করে যাঁরা আবেদন করবেন, তাঁদেরকে বয়সের ছাড় দেওয়া হবে।
এর অর্থ, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির জন্য ২৫ মার্চ পর্যন্ত যাঁদের বয়স ৩০ বছর ছিল, তারা ওই নিয়োগগুলোর জন্য আবেদন করতে পারবেন। অন্য একটি সূত্রের মতে, প্রধানমন্ত্রী যদি নতুন নির্দেশনা দেন তাহলে শুধু সেটা পরিবর্তন হবে। না হলে এই প্রস্তাব বহাল থাকবে।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সরকারি চাকরির যে বিজ্ঞপ্তিগুলো করোনার ছুটির আগে তৈরি হয়েছে, শুধু সে ক্ষেত্রে বয়স ছাড় দেয়ার চিন্তা চলছে। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে বিষয়টি।’
এছাড়া বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য বয়স ছাড় কাজে আসবে না বলেও একাধিক সূত্রে জানা গেছে। সাধারণত অক্টোবর-নভেম্বরে বিসিএসে নিয়োগের চাহিদা পাঠানো হয় পিএসসিতে। সেজন্য আসন্ন বিসিএসেও বয়স ছাড়ের আশা নেই।
এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেছিলেন, ‘২৫ মার্চের আগে কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির প্রস্তাব ছিল কি না নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে এ বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত আসবে, তা অনুসরণ করা হবে।’