বিকল্প পদ্ধতিতে মূল্যায়নের প্রস্তাব জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের

বিকল্প পদ্ধতিতে মূল্যায়নের প্রস্তাব জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের ফাইনাল পরীক্ষা এক মাস পর নেওয়া হবে। তবে প্রথম থেকে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি। এই পরিস্থিতিতে বিকল্প পদ্ধতির মাধ্যমে অনার্স প্রথম, দ্বিতীয় বর্ষ এবং তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের দাবি দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) গণমাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়।

প্রস্তাবে বলা হয়, অনলাইন বা অফলাইনে নির্ধারিত অ্যাসাইনমেন্ট শিক্ষার্থীদের ই-মেইল ঠিকানায় অথবা ডিপার্টমেন্টের মাধ্যমে পাঠিয়ে অ্যাসাইনমেন্ট গ্রহণ করে মূল্যায়ন করা সম্ভব। অনার্স প্রথম বর্ষ, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষ চূড়ান্ত সার্টিফিকেট পরীক্ষা নয়।

গত ২৫ নভেম্বর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের এক মাস পর পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তর কথা জানান। তবে প্রথম বর্ষ থেকে তৃতীয় বর্ষের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী কোনও দিক নির্দেশনা দেননি। এই কারণে সেশন জটে পড়ার আশঙ্কায় অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়নের বিকল্প প্রস্তাবনা তুলে ধরেন প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

হবিগঞ্জের বৃন্দাবন সরকারি কলেজের বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ বলেন, অক্টোবর-নভেম্বরে আমাদের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না। ক্লাসও হচ্ছে না। এই অবস্থায় সেশন জটে যাতে না পড়ি সে কারণে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের মতো বিকল্প পদ্ধতিতে অ্যাসাইনমেন্ট জমা নিয়ে মূল্যায়ন করে পরবর্তী বর্ষে উত্তীর্ণরা যাবে। সংক্ষিপ্ত সিলেবাস করে সপ্তাহে তিনটি বিষয়ে তিনটি অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হলে করা সম্ভব। এরপর মূল্যায়ন করে পরবর্তী বর্ষে উত্তীর্ণ করা সম্ভব। এক মাসের মধ্যে অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করা যাবে। এছাড়া দ্বিতীয় বর্ষে উত্তীর্ণ করে ক্লাস অনলাইনে শুরু করা হলে আমরা সেশন জটে পড়বো না। তাছাড়া এক বছরের সেশন জটে পড়ে যাবো।

গাজীপুরের কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজের বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রিদওয়ান আহমেদ বলেন, প্রত্যেক কলেজ ডিপার্টমেন্টগুলোকে থেকে অ্যাসাইনমেন্ট দিতে হবে। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে মূল্যায়ন করা গেলে আমাদের বেলায় কেনও সম্ভব হবে না। এই পদ্ধতিতে প্রথম থেকে তৃতীয় বর্ষের সব শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পরবর্তী বর্ষে উত্তীর্ণ করা যাবে। প্রয়োজনে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে অ্যাসাইনমেন্ট প্রস্তুত করে দ্রুত শিক্ষার্থীরে কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, দ্রুত অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা যাবে সব বর্ষের শিক্ষার্থীদের। তা না হলে এক বছর পিছিয়ে পড়বেন শিক্ষার্থীরা। প্রথম বর্ষের জন্য এইচএসসির ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেও মূল্যায়ন করে পরবর্তী বর্ষে উত্তীর্ণ করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তারা।
শিক্ষার্থীরা জানান ৪ থেকে ৬ মাস শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পেরেছে। তারা আট মাস ধরে বসে আছেন। শীতে যদি করোনার প্রকোপ বাড়ে তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা না নিলে এক বছর সেশন জটে পড়বে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অনার্স চতুর্থ বর্ষসহ প্রায় ২৯ লাখ শিক্ষার্থীর জীবন থেকে আট মাস সময় চলে গেছে। এখনই ব্যবস্থা না দিলে কতটা সময় সেশন জটে পড়বে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই।

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। আর কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে তারা।
জানা গেছে, অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষা আগস্ট-সেপ্টেম্বরে, দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা অক্টোবরে এবং তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা গত জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির কারণে যথাসময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।

 
About Sanjida Sultana 2205 Articles
Hi, I am Sanjida Sultana. I am the founder of this site. I regularly update all kind of job information of Bangladesh. I like to update all the latest job information regularly from daily newspaper and online job posting site.