নতুন বছরের প্রথম দিন উৎসবের মধ্য দিয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা এবার মহামারীর কারণে বাতিল করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে উৎসবের বিকল্প খুঁজছে সরকার। ছুটি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে এ কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণি।
গত কয়েকবছর ধরেই পহেলা জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়ার কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছিল। এ জন্য দুই মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে আলাদা পাঠ্যবই উৎসব পালন করা হলেও এবার তা না করার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) সাংবাদিকের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে (ভার্চুয়াল) শিক্ষামন্ত্রী এমন কথা জানান তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে, নতুন বছরে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যবই তুলে দেয়া, সেটি মাথায় রেখেই ৩৬ কোটি নতুন বই প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রতি বছরের মতো এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে কেন্দ্রীয়ভাবে পাঠ্যপুস্তক উৎসব করা সম্ভব না হলেও কীভাবে নতুন বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া যায় সেই কাজটি করা হবে।
দীপু মনি বলেন, বই তৈরি থাকবে। তবে যেভাবে বই উৎসব করি, যেখানে সব শিক্ষার্থী হাজির থাকে, এবার স্বাভাবিক কারণে, স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে নিশ্চয় আমরা সমাবেশ করে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে পারব না।। বিকল্প চিন্তা করে কীভাবে প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দেওয়া যায় সেই বিষয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করব। উৎসব গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু সেই উৎসব করতে গিয়ে বড় একটা স্বাস্থ্যঝুঁকি আমরা নিয়ে নেব, সেটি বোধহয় সঠিক হবে না। বিকল্প কীভাবে করতে পারি সেটি আমরা জানিয়ে দেব।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ২০১০ সাল থেকে বছরের প্রথম দিন উৎসব করে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিচ্ছে। গত ১১ বছরে ৩৬৬ কোটি ৮৭ লাখ ৭৭ হাজার ৫৬৬টি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে শিক্ষার্থীরা বলছেন, অনলাইনে পড়াশোনার ভোগান্তি কাটিয়ে ক্লাসে ফিরতে চান তারা। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে গত মার্চ মাস থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অনলাইনে পাঠদান চললেও একে একে বন্ধ করা হয় পিএসসি, জেএসসি এবং সবশেষ এইচএসসি পরীক্ষা। মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত নেয়া হয় অটোপাসের সিদ্ধান্ত।
এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এসে চলমান ছুটি ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে জানিয়ে দেন, সীমিত পরিসরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কথা ভাবা হচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, নভেম্বরের ১৪ তারিখ পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে, এরমধ্যে সাময়িকভাবে খোলা যায় নাকি সেটা দেখছি।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ফের বাড়ানো হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বাতিল করা হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। নেয়া হবে না বার্ষিক পরীক্ষাও।