একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি: সুযোগ না পাওয়া শিক্ষার্থীকে ফের আবেদন করতে হবে

একাদশ শ্রেণিতে পছন্দের কলেজ না পাওয়া শিক্ষার্থীদের আরও ২ দিন অপেক্ষা করতে হবে। পছন্দের কলেজ না পাওয়া শিক্ষার্থীরা আগামীকালের মধ্যে ভর্তি নিশ্চিত করলে মাইগ্রেশনের (কলেজ বদল) সুবিধা পাবে।

এতে আসন শূন্য থাকা সাপেক্ষে পছন্দের তালিকায় উপরের কলেজে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বদলি হয়ে যাবে তারা। তবে আসন শূন্য না হলে মাইগ্রেশন হবে না।

অন্যদিকে কোনো কলেজেই চান্স না পাওয়া শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় দফায় আবেদন করতে হবে। চান্স না পাওয়া ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৬৫ হাজার। আর পছন্দের প্রতিষ্ঠান না পাওয়া শিক্ষার্থী প্রায় ৫ লাখ।

এছাড়া আবেদন করেও কোনো প্রতিষ্ঠানে চান্স না পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত আছে ৯ হাজার ২১৫ জন। এবার ১৩ লাখ ৪২ হাজার ৭১৩ জন আবেদন করেছিল। তাদের মধ্যে ২০ জনের আবেদন বাতিল হয়েছে।

বাকি ১৩ লাখ ৪২ হাজার ৬৯৩ জনের মধ্যে কলেজ-মাদ্রাসায় চান্স পেয়েছে ১২ লাখ ৭৭ হাজার ৭২১ জন। সেই হিসাবে ৬৪ হাজার ৯৭২ জন কোনো কলেজেই চান্স পায়নি। সারা দেশে ৭ হাজার ৫০২টি কলেজ ও মাদ্রাসায় এবার শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে।

এগুলোর মধ্যে ১৪৮টি এখন পর্যন্ত কোনো ছাত্রছাত্রী পায়নি। এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ শিক্ষার্থী। সেই হিসাবে ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৮২০ শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন করেনি।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ শুক্রবার যুগান্তরকে বলেন, চান্স পাওয়া ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি প্রক্রিয়ায় থাকতে হলে ২০০ টাকা জমা দিয়ে সুপারিশ পাওয়া প্রতিষ্ঠানে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে।

তা না হলে বরাদ্দ বাতিল হয়ে যাবে। তাকে ভর্তির জন্য ফের দ্বিতীয় দফায় আবেদন করতে হবে। তিনি বলেন, ভর্তি নিশ্চায়নকারী শিক্ষার্থীই শুধু স্বয়ংক্রিয়ভাবে পছন্দের তালিকার উপরের দিকের কলেজে শূন্য আসনে মনোনয়ন বা মাইগ্রেশনের জন্য বিবেচিত হবে।

সাধারণত চান্স পাওয়াদের মধ্যে কেউ ভর্তি নিশ্চিত না করলে আসন খালি হয়।

৯ আগস্ট থেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন নেয়া হয়। ২৫ আগস্ট রাতে ওই আবেদনের ফল প্রকাশ করা হয়।

সূত্র জানায়, চান্স পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১১ লাখ ৬০ হাজার ৪১৭ জন সাধারণ মেধাতালিকা থেকে কলেজ-মাদ্রাসায় ভর্তির সুপারিশ পেয়েছে। এটা মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ৯১ শতাংশ।

বিভিন্ন বাহিনী পরিচালিত কলেজগুলোতে বিশেষ কোটায় ভর্তির সুপারিশ পেয়েছে ২ হাজার ১৪ জন। আর মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৭ হাজার ৫৫৭ জন। নিজ প্রতিষ্ঠানে কলেজ শাখায় চান্স পেয়েছে ১ লাখ ৭ হাজার ৭৩৩ জন, যা মোট চান্স পাওয়াদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ।

কোথাও চান্স না পাওয়া শিক্ষার্থীর মধ্যে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে আছে ১২ হাজার ৯৩ জন। এ বোর্ডে আবেদন করেছিল ৩ লাখ ৩৯১ জন। তাদের মধ্যে পছন্দের কলেজ পেয়েছে ২ লাখ ৮৮ হাজার ২৯৮ জন। চান্স না পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ বোর্ডে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী আছে ৩ হাজার ৮শ’।

আর চান্স পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে আছে রাজশাহী বোর্ডে ১১ হাজার ৫৭০, কুমিল্লায় ৪ হাজার ৪৯৩, যশোরে ১ হাজার ৭০২, দিনাজপুরে ১২ হাজার ৫৮৮, চট্টগ্রামে ৫ হাজার ৩৪, সিলেটে ২ হাজার ৫২৬, ময়মনসিংহে ৫ হাজার ২৫৬, বরিশালে ৬ হাজার ৫১৩, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৩৯৮ জন এবং মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ২ হাজার ৭০৬ জন। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করা আছে ৯৩ জন।

এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী আছে রাজশাহী বোর্ডে ১ হাজার ৮৯৮, কুমিল্লায় ১ হাজার ১, যশোরে ২০০, দিনাজপুরে ১ হাজার ৭৫, চট্টগ্রামে ৪৪২, সিলেটে ৫৪, ময়মনসিংহে ৪৯৫, বরিশালে ১০৫, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৩ জন এবং মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ১৪২ জন।

পরিদর্শক অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ জানান, ভালো ফল করা বিশেষ করে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের চান্স না পাওয়ার মূল কারণ তাদের অতি আত্মবিশ্বাস এবং অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত।

আমরা প্রাপ্ত নম্বর আর কলেজ পছন্দক্রম বিবেচনায় কলেজ বরাদ্দ করেছি। একজন শিক্ষার্থীর হাতেই তার প্রাপ্ত নম্বর আছে। সেটা বিবেচনায় কোন কলেজ সে পাবে তা তার বোঝার কথা।

কিন্তু তা বিবেচনা না করেই বেশি চাহিদার কলেজে আবেদন করেছে। এখন একটি কলেজে যদি ৫০০ আসন থাকে আর সেখানে জিপিএ-৫ পাওয়া আবেদনই পড়ে ৭০০, তাহলে ২০০ জন বাদ পড়াটাই স্বাভাবিক।

তিনি আরও বলেন, একই নম্বর প্রাপ্ত দুই শিক্ষার্থীর উভয়ে যদি একই কলেজ পছন্দ করে আর এক্ষেত্রে একজনের কলেজটি পছন্দক্রমে ২ নম্বরে এবং দ্বিতীয় জনের ৫ নম্বর থাকলে প্রথম জনকে আমরা কলেজ বরাদ্দ দিয়েছি। এখানে পছন্দক্রম গুরুত্ব পেয়েছে।

এদিকে প্রায় ৬৫ হাজার শিক্ষার্থীর চান্স না পাওয়ার পেছনেও পছন্দসংখ্যা ভূমিকা রেখেছে বলে জানা গেছে। সূত্র জানিয়েছে, ১৩ লাখ ৪২ হাজার ৬৯৩ শিক্ষার্থী মোট ৭২ লাখ ৭৭ হাজার ৬৯১টি আবেদন করেছে।

সেই হিসাবে গড়ে প্রতি শিক্ষার্থী ৫ দশমিক ৪২টি কলেজ পছন্দ তালিকায় দিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী সর্বনিু ৫টি ও সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ পছন্দের বিধান ছিল।

কিন্তু অতি আত্মবিশ্বাস থেকে পছন্দের তালিকায় ১০টি কলেজ দিয়েছে খুব কম সংখ্যক শিক্ষার্থী। ফলে জিপিএ-৫ প্রাপ্তরা ভর্তির সুপারিশ বঞ্চিত হয়েছে। দ্বিতীয় দফা আবেদনেও কলেজ পছন্দের সংখ্যা বাড়িয়ে ১০টি না করলে চান্স পেতে সমস্যা হবে।

প্রথম দফায় চান্স পাওয়া শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চায়ন চলবে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত। এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদন গ্রহণ শুরু হবে ৩১ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

প্রথম মাইগ্রেশন ও দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ হবে ৪ সেপ্টেম্বর। তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন গ্রহণ চলবে ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর।

তাদের ফল প্রকাশ হবে ১০ সেপ্টেম্বর। কলেজভিত্তিক চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে ১৩ সেপ্টেম্বর। এরপর ওইদিন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কলেজে ভর্তি হতে হবে।

About Sanjida Sultana 2205 Articles
Hi, I am Sanjida Sultana. I am the founder of this site. I regularly update all kind of job information of Bangladesh. I like to update all the latest job information regularly from daily newspaper and online job posting site.